ডুমুর ( ত্বীন ) ফলের উপকারিতা

ত্বীন ফলের উপকারিতা, খাওয়ার নিয়ম ও দাম

আজকে আমরা কথা বলবো ডুমুর ( ত্বীন ) উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে। বাঙালি ডুমুর ( ত্বীন ) প্রিয় মানুষ। তাই বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ ডুমুর ( ত্বীন ) খেতে ভালোবাসে। তাই অনেকে ইন্টারনেটে ডুমুর ( ত্বীন ) উপকারিতা ও ডুমুর ( ত্বীন ) খাওয়ার সঠিক সময় জানতে চেয়ে অনুসন্ধান করে। আজকের এই পোস্টে আমরা শিশুদের ডুমুর ( ত্বীন ) খাওয়ার উপকারিতা উল্লেখ করেছি। তাই আজকের এই পোস্ট থেকে ডুমুর ( ত্বীন ) উপকারিতা জেনে নিন। দেখুন ডুমুর ( ত্বীন ) ফল কিভাবে খেতে হয়। ডুমুর ফল খাওয়ার নিয়ম দেওয়া হয়েছে আজকের পোস্টে।

ত্বীন ফলের উপকারিতা

ডুমুর ( ত্বীন ) ফলে মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ভিটামিন। তাই এটা আমাদের শরীর গঠনে ভূমিকা রাখে। তাই আমাদের মাঝে অনেকেই আছে যারা সব সময় ডুমুর ( ত্বীন ) খেতে ভালোবাসে। তাদের জন্য আজকের এই পোস্ট এ ডুমুর ( ত্বীন ) খাওয়ার উপকারিতা তুলে ধরা হয়েছে।

  • ডুমুর পিত্ত ও আমাশয়(Dysentery) রোগে উপকারী।
  • এতে লোহা বেশি আছে বলে বেশি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য(Constipation) হতে পারে।
  • ডুমুর রক্তপিত্তা, রক্তপ্রদর, রক্তপড়া(Bleeding) অর্থাৎ রক্তহীনতা রোগে উপকারী।
  • জ্বরের পর ডুমুর রান্না করে খেলে টনিকের কাজ করে।
  • মেয়েদের মাসিকের সময় বেশি রক্তস্রাব হলে কচি ডুমুরের রসের সঙ্গে সামান্য মধু(Honey) মিশিয়ে খেলে উপকার হয়।
  • দুধ ও চিনির সঙ্গে ডুমুরের রস খেলেও অধিক ঋতুস্রাব(Menstruation) বন্ধ হয়।
  • আমাশয় হলে কচি ডুমুরের পাতা আতপ চালের সঙ্গে চিবিয়ে খেলে ভালো হয়। তিন দিন খেতে হয়।
  • সাদা ও রক্ত আমাশয় হলে, ডুমুরগাছের ছাল রস ২ বেলা ২ চামচ রসের সঙ্গে মধু(Honey) মিশিয়ে খেলে ভালো হয়।
  • মাথাঘোরা রোগে, ডুমুর ভাজা করে খেলে ভালো হয়। তবে সর্বদা মনে রাখতে হবে ডুমুরের ভেতরের অংশ অখাদ্য। খেলে ক্ষতি হবে। সবসময় ডুমুরের বাইরের অংশ রান্না করে খাওয়া যায়।
  • হেঁচকি উঠা রোগে ডুমুরের বাইরের অংশ কেটে পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে এক ঘন্টা, তারপর ছেঁকে নিয়ে ঐ পানি এক চামচ করে আধ ঘন্টা অন্তর খেলে হেঁচকি ওঠা বন্ধ হয়।
  • ডায়াবেটিস(Diabetes) রোগে ডুমুর গাছের মূলের রস খুবই উপকারী।

ত্বীন ফলের পুষ্টিগুণ

পবিত্র কুর-আনে ত্বীন নামে একটি সুরা আছে। যেখানে মহান আল্লাহ ত্বীন ফলের নামে কসম খেয়েয়েছেন। আবার হযরত আদম ও মা হাওয়া আল্লাহর নিষেধ অমান্য করে গন্ধম খাওয়ার পর যখন বস্ত্রহীন হয়ে পরেছিলেন। তখন এই ত্বীন ফলের পাতা দিয়েই লজ্জা নিবারন করেছিলেন। তাতে স্পস্ট করে বুঝা যায় ত্বিন গাছ জান্নাতেও আছে অর্থাৎ ত্বীন একটি জান্নাতী ফল। ডুমুর ফলে প্রচুর পরিমান ভিটামিন এ,ভিটামিন সি,ভিটামিন কে,ভিটামিন বি, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিংক, কপার, ম্যাংগানিজ, আইরন।

প্রতি ১০০ গ্রাম ড্রাই ত্বীন ফলে রয়েছে –

  • কার্বোহাইড্রেট ৬৩.৮৭ গ্রাম
  • সুগার ৪৭.৯২ গ্রাম
  • আঁশ ৯.৮ গ্রাম
  • ফ্যাট ০.৯৩ গ্রাম
  • প্রোটিন ৩.৩০ গ্রাম
  • থায়ামিন ০.০৮৫ মি.গ্রা.
  • রিবোফ্লাভিন ০.০৮২ মি.গ্রা.
  • নিয়াসিন ০.৬১৯ মি.গ্রা.
  • প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড ০.৪৩৪ মি.গ্রা.
  • ভিটামিন বি-৬ ০.১০৬ মি.গ্রা.
  • ফোলেট ৯ আইইইউ
  • ভিটামিন সি ১.২ মি.গ্রা.
  • ক্যালসিয়াম ১৬২ মি.গ্রা.
  • আয়রন ২.০৩ মি.গ্রা.
  • ম্যাগনেসিয়াম ৬৮ মি.গ্রা.
  • ফসফরাস ৬৭ মি.গ্রা.
  • পটাশিয়াম ৬৮০ মি.গ্রা.
  • জিঙ্ক ০.৫৫ মি.গ্রা.
  • এনার্জি ২৪৯ কিলোক্যালরি

ত্বীন ফলের দাম

এরাবিয়ান ত্বীন/ ডুমুর ফল ১ কেজি – 2,100 টাকা

ডুমুর ফল খাওয়ার নিয়ম

ডুমুর ফল খাওয়ার বেশ কয়েকটি উপায় রয়েছে। কাঁচা, শুকনো, বা ভিজিয়ে ডুমুর খাওয়া যায়।

কাঁচা ডুমুর খাওয়া

কাঁচা ডুমুর বেশ মিষ্টি এবং রসালো হয়। এটি সাধারণত সরাসরি খাওয়া হয়। কাঁচা ডুমুরের পুষ্টিগুণ শুকনো ডুমুরের তুলনায় কম।

শুকনো ডুমুর খাওয়া

শুকনো ডুমুরের পুষ্টিগুণ কাঁচা ডুমুরের তুলনায় বেশি। শুকনো ডুমুর সাধারণত সরাসরি খাওয়া হয়, বা এটি দিয়ে সালাদ, মিষ্টান্ন, বা অন্যান্য খাবার তৈরি করা হয়।

ভিজিয়ে ডুমুর খাওয়া

ভিজিয়ে ডুমুর খাওয়ার বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে। ভিজিয়ে ডুমুরের মধ্যে থাকা ফাইবারের পরিমাণ বেড়ে যায়, যা হজম স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এছাড়াও, ভিজিয়ে ডুমুরের মধ্যে থাকা ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থের শোষণ শরীরে ভালোভাবে হয়।

ভিজিয়ে ডুমুর খাওয়ার জন্য, রাতে কয়েকটি ডুমুর সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন সকালে পানি ফেলে দিয়ে ডুমুর খেয়ে নিন।

ডুমুর ফল খাওয়ার কিছু নিয়ম হলো:

  • ডুমুর ফল পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।
  • ডুমুর ফল খাওয়ার আগে ভালো করে ধুয়ে নিন।
  • ডুমুর ফল খাওয়ার পর মুখ ভালো করে ধুয়ে নিন।

সর্বশেষ কথা

আশা করি আজকের পোস্ট এর সাহায্যে সবাই ডুমুর ( ত্বীন ) উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আপনাদের যদি ডুমুর ( ত্বীন ) উপকারিতা ও অপকারিতা পোস্ট ভালো লেগে থাকে। তাহলে অবশ্যই সবার সাথে শেয়ার করবেন। যাতে সবাই ডুমুর ( ত্বীন ) খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারে। সাথে থাকার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।

আরও দেখুনঃ 

কাজু বাদামের উপকারিতা – দেখুন বিস্তারিত

চিনা বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা

দারুচিনির উপকারিতা ও অপকারিতা

স্বপ্নদোষ বন্ধ করার উপায়

কলার উপকারিতা ও অপকারিতা

মেথির উপকারিতা ও অপকারিতা

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top