কলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

কলার উপকারিতা ও অপকারিতা – দেখুন বিস্তারিত

আজকে আমরা কথা বলবো কলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে। বাঙালি কলা প্রিয় মানুষ। তাই বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ কলা খেতে ভালোবাসে। তাই অনেকে ইন্টারনেটে কলার উপকারিতা ও কলা খাওয়ার সঠিক সময় জানতে চেয়ে অনুসন্ধান করে।

আজকের এই পোস্টে আমরা শিশুদের কলা খাওয়ার উপকারিতা উল্লেখ করেছি। তাই আজকের এই পোস্ট থেকে দেশী কলার উপকারিতা জেনে নিন।

কলার উপকারিতা

কলার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ভিটামিন। তাই এটা আমাদের শরীর গঠনে ভূমিকা রাখে। তাই আমাদের মাঝে অনেকেই আছে যারা সব সময় কলা খেতে ভালোবাসে। তাদের জন্য আজকের এই পোস্ট এ কলা খাওয়ার উপকারিতা তুলে ধরা হয়েছে।

  • কলা শক্তির ডিপো – আপনার দ্রুত শক্তি চান? তাহলে ঝটপট ২টি পাকা কলা খেয়ে ফেলুন এটি নিমিষেই আপনাকে শক্তি সাপ্লাই করতে শুরু করবে। কারন করায় আছে প্রচুর গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ এগুলো হজম করার দরকার নেই শুধু রক্তে মিশে যায়। আবার এতে যে ডায়াটরি ফাইবার আছে তা সুপার ফাস্ট গতিতে হজম হয়ে আরও গ্লুকোজ তৈরিকরে যা প্রচুর শক্তির যোগান দেয়।
  • কলা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে কাজ করে – হলে রক্তে সুগার বেশি থাকে। আপনি মিষ্টি বা শর্করা জাতীয় খাবার খেলে তা দ্রুত হজম হয়ে রক্তে মিশে যায় এবং শর্করার পরিমাণ আরো বৃদ্ধি করে। এতে করে ডায়াবেটিস বাড়ে। কম পাকা কলায় যে শর্করা থাকে তা রেসিস্ট্যান্ট স্টার্চ এটি সহজে হজম হয় না।এটি অল্প করে হজম হয় আর রক্তে মেশে ফলে শর্করার মাত্রা ঠিক থাকে।
  • কলা হার্ট ভালো রাখে – কলাতে আছে প্রচুর পটাশিয়াম এটি হার্টের পেশিগুলোকে তাজা রাখে। হার্ট এটাকের ঝুঁকি কমায়। মস্তিষ্কের স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে হ্রাস করে।ব্লাড প্রেসার কমাতে কলা অত্যন্ত উপকারী।
  • কলা কিডনি সুস্থ রাখে – কলার পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম কিনডির কাজ সঠিকভাবে পরিচালনা করতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা যায় যেসব ব্যক্তি প্রতিদিন কলা খান তাদের কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ৪০ ভাগ কম। কিডনি পাথর হওয়ার সম্ভাবনা কমাতে সাহায্য করে এটি। মূত্রতন্ত্রের ইনফেকশন কমাতে এর অবদান আছে।
  • কলা আলসার ভালো করে – পেটে আলসার হলে কলা খান। কলার মিউসিলেজ পাকস্থলীর ভেতরের প্রাচিরে ক্ষতিগ্রস্ত মিউকাস পর্দাকে সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে। কলার ফাইবার গ্যাস্ট্রিক হওয়ার সম্ভাবনা কমায়।
  • কলা হজমে সাহায্য করে – চর্বি জাতীয় খবার গ্রহন করার ৩০ মিনিট পর একটি পাকা কলা খেলে দ্রুত চর্বি হজম হয়ে যায়। চর্বির ক্ষতিকর অংশ খুব সহজে পরিপাক হয় কলার কারণে।কলায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার থাকায় এটি হজমে সহায়তা করে। কলায় থাকে পেকটিন নামক একটি ফাইবার। যা কোষ্টকাঠিন্যের মতো সমস্যার দূরে রাখতে সাহায্য করে।
  • কলা ভিটামিনের আধার – কলাতে A to Z ভিটামিন আছে। চিন্তা করুন, শুধু কলা খেলেই আপনি সব ভিটামিন পাবেন। বাজার থেকে কোন ভিটামিনের কৌটা কিনতে হবে না। এতে থাকা পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন বি ও সি শরীরের জন্য দারুণ উপকারী।
  • কলা তারুণ্য ধরে রাখে – কলার ভিটামিন ও অন্যান্য উপাদান কোষকে অকালে বুড়িয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে। ত্বকের কোষে পানির পরিমান বৃদ্ধি করে কলা তাই ত্বকের লাবণ্যতা বজায় থাকে।
    এর ভিটামিন ই যৌবন ধরে রাখতে সাহায্য করে।কলার ম্যাগনেসিয়াম ত্বকের কোলাজেন গঠনে সহায়তা করে এবং ত্বককে ফ্রিরেডিকেলজনিত ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে।
  • কলা ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় – বেশি পাকা কলাতে TNF-A নামক এক ধরণের যৌগ আছে, যা শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি শ্বেত রক্ত কণিকার পরিমাণ বাড়ায়। এতে করে ব্লাড ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেক কমে যায়।
  • কলা মানসিক চাপ কমায় – ট্রিপটোফ্যান নামক অ্যামিনো এসিড কলার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, এটি রক্তে মিশে যাওয়ার পর রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে সেরাটোনিনে রূপান্তর হয়।আনন্দদায়ক অনুভূতি সৃষ্টির জন্য সেরাটোনিন কাজ করে। সেরাটোনিনের সঠিক মাত্রা আপনার মন ভালো রাখবে এবং মানসিক চাপ কমাবে।মনতো ফুরফুরা তাইলে ভালো ঘুম তো এমনি হবে।এর মধ্যে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়াম- যা বিষণ্ণতা রোধে কাজ করে।
  • কলা রক্ত বৃদ্ধি করে – কলাতে ভিটামিন বি-৬ থাকে এটি রক্তের লোহিত কণিকার সংখ্যা বৃদ্ধি করে। এর ক্যালসিয়াম হাড় মজবুত করে ফলে হাড় থেকে রক্ত কণিকা ভালো মাত্রায় উৎপন্ন হয় এবং রক্ত স্বল্পতা কমায়।
  • কলা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে – কলায় প্রচুর ক্যারোটিনয়েড নামক এন্টি অক্সিডেন্ট আছে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। এর ভিটামিন ই প্রজনন স্বাস্থ্য ভালো করে। ভিটামিন এ কলায় প্রচুর আছে ফলে এটি আপনার চোখের জ্যোতি বৃদ্ধি করবে।
  • কলা স্মৃতিশক্তি বাড়ায় – প্রতিদিন একটি করে কলা খেলে আপনার মস্তিষ্কের স্মৃতিভাণ্ডার শক্তিশালি হবে মানে আপনার স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধি পাবে। এর বিভিন্ন উপাদান মগজের প্রয়োজনীয় খাদ্যের জোগান দেয়।
  • কলার  ওজন বাড়াতে ও কমাতে সাহায্য করে – একদম পাকা কলা ২টি ও ঘন দুধ ২৫০ মিলি রোজ খেলে দেহের ওজন বাড়ে। আবার একটু কম পাকা কলা ২-৩ কয়েক মিনিট পরপর খেলে পেট ভরে যায় ক্ষুধা কম লাগে তাই ওজন কমে যায়। ওজন কমানোর জন্য বেশি পাকা কলা না খেয়ে একটু কম পাকা কলা খান। কম পাকা কলাতে রেসিস্ট্যান্স স্টার্চ পাওয়া যায় বেশি।এটি ওজন কমাতে সাহায্য করবে কিন্তু শক্তি বাড়াবে।

কলা খাওয়ার সঠিক সময়

যারা কলা খেতে ভালোবাসেন তাদেরকে অবশ্যই জানতে হবে কলা খাওয়ার সঠিক সময় কখন। আপনাদের সবার সুবিধার কথা চিন্তা করে আজকের এই পোস্টে কলা খাওয়ার সঠিক সময় উল্লেখ করা হয়েছে।

কলা মূলত সকাল বেলাই খাওয়া উচিৎ। সকাল বেলা এটি খেলে সারাদিন এর উপকারিতা পাওয়া যায়। তবে সকালে এটি খেলেও খালি পেটে কিন্তু খাওয়া ঠিক নয়। খালি পেটে কোনোভাবেই কলা খাওয়া উচিৎ না। সকালে খেলেও অন্য কোনো খাবারের সাথে মিশিয়ে বা অন্য কোনো নাস্তা খাওয়ার পর এটি খাওয়া উচিৎ। তবে শুধু সকালেই যে খাওয়া যায় এমন নয়। দিনের অন্য সময়ও খাওয়া যায় কলা। তবে সকালে খেলে এর উপকারিতা বেশি পাওয়া যায়।

দেশি কলার উপকারিতা

সবরি কলা বা দেশী কলা 🍌 সবার স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। তাই অনেকে আছেন যারা দেশী কলার উপকারিতা জানতে চেয়ে ইন্টারনেটে অনুসন্ধান করেন। তাদের জন্য আজকের এই পোস্টের দেশি কলার উপকারিতা উল্লেখ করা হয়েছে।

  • দেশী কলায় আছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। দেহের পটাশিয়ামের চাহিদা পূরণ করতে প্রতিদিন একটি দেশী কলা খাওয়া উপকারী।
  • কলা একটি মিষ্টি ফল। তবে মিষ্টি হলেও সুগার বাড়ায় না এই ফল। এর জিআই ভ্যালু বেশ ভালো হওয়ায় ডায়াবেটিসের রোগীরাও এটি খেতে পারেন নিশ্চিন্তে।
  • দেহের এনার্জি বা শক্তি বাড়াতে এর রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান। শরীরে দুর্বলতা দেখা দিলে তাই এই ফল খাওয়া যায়। এতে শরীরে শক্তি পাওয়া যাবে।
  • এই ফলে পটাশিয়ামের পাশাপাশি রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম। আর এই দুই উপাদানই দেহের হাড়কে শক্ত করে।
  • এতে থাকা ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে।
  • ছোট বাচ্চাদের নতুন নতুন শক্ত খাবার খাওয়ানোর সময় চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ফল হিসেবে কলা খাওয়ানো যেতে পারে।
  • দেশী কলা পেট পরিষ্কার রাখে পাশাপাশি হজমশক্তিও বাড়ায়। এতে থাকা ফাইবার এই কাজে সাহায্য করে।
  • দেশী কলায় আরো আছে ক্যারোটিনয়েড ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এগুলোও দেহের জন্য অনেক উপকারী।

শিশুদের কলা খাওয়ার উপকারিতা

একজন শিশু ঠিক কতগুলো কলা প্রতিদিন খেলে তার স্বাস্থ্য ভালো হবে। অথবা কতকগুলো কলা একজন শিশু প্রতিদিন খেতে পারবে। এজাতীয় সকল তথ্য তুলে ধরা হয়েছে আজকের এই পোস্টে।

  • ফাইবারে পূর্ণ: এটিতে উচ্চতর ফাইবার সামগ্রী রয়েছে যা দীর্ঘক্ষণ ধরে পূর্ণ বোধ করায়। তাছাড়া, ফাইবার অন্ত্র পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।
  • মূত্র সংক্রমণের জন্য ভাল: কলাগুলি মূত্রনালীর সংক্রমণ থেকে সমস্ত বিষাক্ত খাবার পরিষ্কার করে সাধারণত কোনও মূত্র সংক্রমণের নিরাময় বলে পরিচিত।
  • পুষ্টিতে সম্পূর্ণ: ফলটি পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, লোহা, ফোলেট, নিয়াসিন এবং ভিটামিন বি ৬-এর মত পুষ্টির সাথে পূর্ণ হয়। অতএব, কলা শিশুদের ওজন অর্জন করতে সাহায্য করে।
  • হাড়ের জন্য ভাল: কলার মধ্যে পটাসিয়াম এবং ক্যালসিয়াম থাকে যা শক্তিশালী হাড় ক্রমবর্ধনে সাহায্য করে।
  • অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ করে: রক্তের মধ্যে হিমোগ্লোবিন উৎপাদনের জন্য কলা লোহায় সমৃদ্ধ। এটা আপনার শরীরের লাল রক্ত ​​কোষ সংশ্লেষণ করতে সাহায্য করে।
  • মস্তিষ্কের শক্তি: কলাগুলিতে উপস্থিত ফোলেট মস্তিষ্কের বিকাশ এবং স্মৃতি উন্নত করতে সহায়তা করে। এটি মস্তিষ্কের ক্ষতি প্রতিরোধ করে।
  • দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে: কলার মধ্যে ভিটামিন এ থাকে যা উন্নত দৃষ্টিশক্তিতে সাহায্য করে, কারণ এটি কর্নিয়ায় সুরক্ষা দিতে সাহায্য করে।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিকার: কলা ফাইবারে উচ্চ হয়। এটি অন্ত্র আন্দোলনে সাহায্য করে, এইভাবে, শিশুদের মধ্যে কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় করে।

অতিরিক্ত কলা খেলে কি হয়?

যারা অতিরিক্ত কলা খায় তারা মাঝে মাঝে ভয় পেয়ে ইন্টারনেটে লিখে বেড়ায় অতিরিক্ত কলা খেলে কি হয়। আমরা আজকে আপনাদের জানাবো অতিরিক্ত কলা খেলে কি হতে পারে। তাই নিজে থেকে দেখে নিন অতিরিক্ত কলা খেলে কি সমস্যা হতে পারে।

ওজন বৃদ্ধি: মাঝারি মাপের একটি পাকা কলায় ১০৫ ক্যালোরি শক্তি থাকে। তাই বেশি কলা খেলে ওজন বৃদ্ধির সম্ভাবনা প্রবল।
মাইগ্রেন: কারও যদি মাইগ্রেনের সমস্যা থাকে তাহলে তাদের যতটা সম্ভব কলা এড়িয়ে চলা উচিত। কলায় টাইরামাইন নামে এক ধরনের উপাদান থাকে কলায় যা মাইগ্রেনের কারণ।
হাইপারক্যালেমিয়া: রক্তে পটাশিয়ামের মাত্রা বেড়ে গেলে এই রোগ হয়। এই রোগে আক্রান্তরা সহজেই ক্লান্ত হয়ে পড়েন। হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন অনিয়মিত হয়ে থাকে। কলায় পটাশিয়াম থাকায় বেশি খেলে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
দাঁতের ক্ষয়: প্রচুর পরিমাণে শর্করা থাকায় বেশি কলা খেলে দাঁতের ক্ষতি হয়। এমনকী দাঁতের স্বাস্থ্যের জন্য কলা নাকি চকোলেটের থেকেও বেশি ক্ষতিকর।
ক্লান্তি: পাকা কলাতে ট্রিপটোফ্যান আমাইনো অ্যাসিড থাকে। এই অ্যামাইনো অ্যাসিডের প্রভাবে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়। দেহে ক্লান্তি আসে এবং সব সময় ঘুম পায়।
নার্ভ: ভিটামিন বি৬ বেশি খাওয়ার প্রভাবে স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি হয়ে থাকে। কলায় এই ভিটামিনের আধিক্য আছে তাই খুব বেশি কলা খাওয়া উচিত নয়।
অ্যালার্জি: কলা অনেক সময়ই অ্যালার্জির কারণ হয়ে থাকে। ঠোঁট ফুলে যায়, গলা জ্বালা করে।
শ্বাস নিতে সমস্যা: যাঁদের শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা আছে বেশি মাত্রায় কলা খেলে তা বেড়ে যেতে পারে।
পেট ব্যথা: বাজার থেকে কেনা কলার বেশির ভাগই রাসায়নিকের সাহায্যে পাকানো হয়ে থাকে। তা ছাড়াও কলায় শর্করার পরিমাণ খুব বেশি। এসবের জন্য পেট ব্যথা হতে পারে।
কোষ্ঠকাঠিন্য: কলা বৃহদন্ত্রের চলনে সাহায্য করে থাকে। কিন্তু বেশি পরিমাণ কলা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা যেতে পারে।
গ্যাস: কলাতে থাকা ফ্রুক্টোজ এবং ফাইবার এক সঙ্গে গ্যাস সৃষ্টি করতে পারে।
ডায়াবেটিস: সুগারের পরিমাণ বেশি থাকায় অত্যধিক মাত্রায় কলা খেলে ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা থাকে।

সাগর কলার উপকারিতা ও অপকারিতা

যারা সাগর কলা খেতে ভালোবাসেন তাদের জন্য সাগর কলার উপকারিতা ও অপকারিতা নিচে তুলে ধরা হলো। আশাকরি এখান থেকে আপনারা জানতে পারবেন সাগর কলার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।

উপকারিতা

গ্রামে প্রচলিত আছে সাগর কলা সেক্স কমায়, আসলে সাগর কলার মিউসিলেজ বির্য রস বৃদ্ধি করে আর ফ্রুকটোজ শুক্রাণুর খাদ্য যোগায়। ঠান্ডা লাগলে বা কাশি হলে সাগর কলা খাওয়া যাবে না, আসলে ঠান্ডা বেশী বা কাশ হওয়ার সাথে কলার কোন সম্পর্ক নেই বরং কলার পেকটিন ও মিউসিলেজ কাশি নরম করে বের হতে সাহায্য করে। তবে শ্বাস কষ্ট বা অ্যাজমা আছে এমন রোগির সাগর কলা না খাওয়াই ভালো।

অপকারিতা

পাকা কলার উপকারিতা

অনেকেই আছেন যারা পাকা কলা সবসময় খান। তাই আজকের পোস্ট এর নিচের অংশ থেকে জেনে নিন পাকা কলার উপকারিতা। আশা করি আজকের পোস্ট এর সাহায্যে আপনি পাকা কলা খেলে কি কি উপকার হয় সে সম্পর্কে জানতে পারবেন।

কাঁচা কলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

অনেকেই আছেন যারা কাঁচা কলা সিদ্ধ দিয়ে ভর্তা বানিয়ে খান। তাদের জন্য আজকের পোষ্টে কাঁচা কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। তাই নিচে থেকে কাঁচা কলা খাওয়ার উপকারিতা জেনে নিন।

উপকারিতা

  • কোলেস্টেরল হ্রাস কাঁচা কলার অনেক সুবিধা রয়েছে এবং এটি গ্রহণের ফলে কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস পায়। যেহেতু কাঁচা কলাতে প্রচুর পরিমাণে অবশিষ্টাংশের স্টার্চ থাকে, এটি হজমে উন্নতি তো করেই  তবে খারাপ কোলেস্টেরল হ্রাস করতেও সহায়তা করে। এটি হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করে। এর বাইরে রক্তে শর্করাকে হ্রাস করে সুগারও নিয়ন্ত্রণ করে।
  • মাথা ব্যথা থেকে মুক্তি – কাঁচা কলা সেবন করলে মাথা ব্যথার সমস্যা কম হয়। এতে উপস্থিত পুষ্টি উপাদানগুলি মেজাজ পরিবর্তন ও ভালো করে এবং ব্যথা থেকে মুক্তি দেয়। কিছু গবেষণা অনুসারে, কাঁচা কলাতে প্রচুর পরিমাণে যৌগ থাকে যা ব্যথা কমায় এবং শিথিল করে।
  • ভাল পরিমাণে ফাইবার – কাঁচা কলাতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। ফাইবার হজমে উন্নতি করে। সিদ্ধ কাঁচা কলাতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। সঠিক পরিমাণ ব্যবহার করা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস করে। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার অবশ্যই আপনার ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
  • পেশী শক্তিশালী করতে – কাঁচা কলাতে প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম থাকে। কাঁচা কলা পেশী শক্তিশালী করতে উপকারী । এছাড়াও, সিদ্ধ কাঁচা কলাতে প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম থাকে। এটি পেশীর সমস্যা হ্রাস করে। অনেকেরই মাংসপেশির সমস্যা থাকে। তাদের কাঁচা কলার সবজি খাওয়া উচিত। মাংসপেশির সমস্যা এড়াতে কাঁচা কলা খান।
  • ডায়াবেটিক রোগীর জন্য উপকারী কাঁচা কলা খাওয়া ডায়াবেটিস রোগীর পক্ষে খুব উপকারী। কাঁচা কলায় মিষ্টি হয় না এবং এটি রক্তে সুগার এর পরিমাপ হ্রাস করে। রক্তে সুগার এর হ্রাস দ্বারা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যা কমাতে খাবারের দিকে বেশি মনোযোগ প্রয়োজন। ডায়াবেটিস আক্রান্তরা যারা, অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যে, কাঁচা কলা সেবন করেন, তাদের প্রচুর উপকার হয়।
  • হজম ক্রিয়ার উন্নতি কাঁচা কলা হজমে স্বাস্থ্যের উন্নতি করে। এটি ভাল পরিমাণে ব্যাকটিরিয়াকে মেরে ফেলে। এটি পেটের সংক্রমণ রোধ করে। যাদের পেটে ব্যথা এবং স্প্যামস রয়েছে তাদের সঠিক পরিমাণে কাঁচা কলা খাওয়া উচিত। এতে আগের তুলনায় পাচনতন্ত্রের উন্নতি করে।
  • ডায়রিয়ার উপশম  আপনার যদি ডায়রিয়ার সমস্যা হয় তবে কাঁচা কলা খাওয়া উচিত। কারণ কাঁচা কলায় অ্যান্টি-ডায়রিয়ার বৈশিষ্ট্য রয়েছে। কাঁচা কলা খাওয়ার আগে ভালো করে ধুয়ে নিন। এবং সিদ্ধ করে খান। এটি পেটের সংক্রমণ এবং ব্যাকটেরিয়াল ভাইরাল সংক্রমণকে রোধ করে।  এ ছাড়া ডায়রিয়ার কারণে ক্লান্তি এবং পেটের ব্যথার সমস্যা হ্রাস হয়।

অপকারিতা

  • কাঁচা কলা বেশি খাওয়ার ফলে পেটে ব্যথা হতে পারে।
  • কাঁচা কলা বেশি খাওয়ার ফলে বুক জ্বালা, অ্যাসিড রিফ্লেক্স হতে পারে।
  • কাঁচা  কলা বেশি খাওয়ার ফলে অনেকেরই পেট খারাপ হয়, পেট ফলের সমস্যা হয়, পেটে কৃমি হতে পারে।

কলার অপকারিতা

কলা খেলে কি কি সমস্যা হতে পারে এ জাতীয় সকল তথ্য এক জায়গায় সম্মিলিত ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। তাই আজকের এই পোস্ট থেকে দেখে নিন কলা খাওয়ার উপকারিতা।

  1. খালিপেটে কলা খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বেড়ে যাবে।
  2. বেশি মাত্রায় কলা খেলে শরীরে উচ্চ মাত্রার ম্যাগনেশিয়ামের ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয় ফলে হার্টের রোগ হতে পারে।
  3. যাদের দেহের পটাসিয়াম লেভেল বেশি তাদের কলার অপকারিতা ভালো করে জানা উচিৎ কারণ কলার পটাশিয়াম দেহের পটাশিয়াম লেভেল কে আরো বৃদ্ধি করবে এতে হাইপারক্যালিমিয়া রোগ হবে। এরফলে কিডনি জটিলতা,পেশির খিঁচুনি, মাথা ঘোরা,হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন অনিয়মিত হওয়ার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  1. যাঁদের শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা আছে বেশি মাত্রায় কলা খেলে তা বেড়ে যেতে পারে।
  2. আপনি চরম লেভেলের ডায়াবেটিকস রোগী হলে একদম পাকা কলা খাবেন না। এটি আপনার সুগার লেভেল বিপদ মাত্রা অতিক্রম করে দেবে।
  3. মাইগ্রেনের সমস্যা থাকলে কলা না খেলেই ভালো হয়। কলাতে টাইরামাইন নামক এক ধরনের উপাদান থাকে যা মাইগ্রেনের অন্যতম কারণ।

সর্বশেষ কথা

আশা করি আজকের পোস্ট এর সাহায্যে সবাই কলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আপনাদের যদি কলার উপকারিতা ও অপকারিতা পোস্ট ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই সবার সাথে শেয়ার করবেন। যাতে সবাই কলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারে। সাথে থাকার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।.

আরও দেখুনঃ 

মেথির উপকারিতা ও অপকারিতা

আজওয়া খেজুরের উপকারিতা – দেখুন বিস্তারিত তথ্য

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top