জাতীয় শিশু দিবস রচনা

১৭ ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস রচনা ২০২৪

আজ ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস ২০২৪। আপনারা যারা 17 মার্চ উপলক্ষে জাতীয় শিশু দিবস রচনা প্রতিযোগিতা অংশগ্রহণ করতে চান। তাদের জন্য আজকের এই পোস্ট এ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন রচনা ও জাতীয় শিশু দিবস রচনা ১০০০/৫০০ শব্দ উল্লেখ করা হয়েছে। এ রচনার মাধ্যমে আপনারা জাতীয় শিশু দিবস রচনা এ অংশগ্রহণ করতে পারবেন।

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিবস ও জাতীয় শিশু দিবস

আজ বঙ্গবন্ধুর জন্ম দিবস ২০২৪। বাংলাদেশের সবাই বঙ্গবন্ধুর ১০২ তম জন্মদিনে বিভিন্নভাবে তিনটি আয়োজন করেছে। অনেকেই জানেন না বঙ্গবন্ধু ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। আর যদি তিনি বেঁচে থাকতেন তাহলে তার বয়স হত ১০২ বছর। বঙ্গবন্ধু মৃত্যুবরণ করেন ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তার নিজ বাসভবনে।

অন্যদিকে বাংলাদেশের জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে কোন দিবস ছিল না। পরবর্তীতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর ভালোবাসা ও মানুষের মাঝে শিশুদের প্রতি জনসচেতনতা সৃষ্টি করার জন্য জাতীয় শিশু দিবস ঘোষণা করা হয়। শুরুর দিকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে কোন ছুটির দিন ছিল না। কিন্তু পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর জন্ম দিবস ও শিশু দিবস কে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়।

জাতীয় শিশু দিবস রচনা

১৭ মার্চ বাংলাদেশে পালিত হয় জাতীয় শিশু দিবস। এই দিনটি উপলক্ষে বাংলাদেশের সরকারি সকল প্রতিষ্ঠান রচনা প্রতিযোগিতা করা হয়ে থাকে। তার জন্য আজকের এই পোস্টের জাতীয় শিশু দিবস রচনা উল্লেখ করা হয়েছে। তাই নিচে থেকে সংগ্রহ করে নিন জাতীয় শিশু দিবস রচনা। জাতীয় শিশু দিবস রচনা বাংলাদেশ pdf ডাউনলোড করে নিন।

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিবস ও জাতীয় শিশু দিবস রচনা

১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্ম দিবস অন্যদিকে জাতীয় শিশু দিবস পালন করা হয়। তাই আজকের এই পোস্টে বঙ্গবন্ধুর জন্ম দিবস ও জাতীয় শিশু দিবস রচনা উল্লেখ করেছি আমরা। আপনি যদি বিভিন্ন রচনা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে চান তাহলে আজই সংগ্রহ করে নিন বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জন্ম দিবস রচনা। নিচে দেখুন বাংলাদেশের জাতীয় শিশু দিবস রচনা।

বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় শিশু দিবস রচনা

আজকের পোস্টে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় শিশু দিবস রচনা তুলে ধরা হয়েছে। তাই আপনি যদি ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় শিশু দিবস রচনা পেতে চান। তাহলে আজকের পোস্ট থেকে দেখে নিন ১৭ মার্চ এর রচনা। বঙ্গবন্ধু ও শিশু দিবস রচনা ভাল করে লিখে আপনি রচনা প্রতিযোগিতায় প্রথম হতে পারেন। 

আরও দেখুনঃ 

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস রচনা ১০০০ শব্দ

১৭ মার্চ জাতীয় শিশু দিবস রচনা শুরু হচ্ছেঃ 

ভূমিকা :

‘আককের শিশু / পৃথিবীর আলোয় এসেছে
আমরা তার তবে একটি সাজানো বাগান চাই।’

 প্রবীণ শিল্পীদের দরদভরা কণ্ঠে গান হয়ে একটা বিষয়েই আর্তি জানায়- শিশুর অধিকার কী? শিশুর অধিকার যেন আজ সবার মাঝে সোচ্চার কণ্ঠে ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। আজকে যে শিশুটি জন্ম নিল একদিন সেই তো বড় হয়ে নামকরা সাহিত্যিক, স্বনামধন্য ডাক্তার, খ্যাতিমান শিল্পী বা জাতীয়খ্যাত বিজ্ঞানী হবে। কিন্তু কী দেখছি আমরা? তৃতীয় জাতীয়ের শিশুদের দিকে তাকালে তাদের নানা করুণচিত্র আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে। তারা ক্ষুধায় পায় না অন্ন, চিকিৎসার জন্য পায় না ওষুধ। শুধু তাই নয়- বাসস্থান ও শিক্ষার মতো মৌলিক অধিকারগুলো থেকেও তারা বঞ্চিত। এসব শিশুর কতজন কলে–কারখানায়, ক্ষেতে-খামারে শ্রমিকের কাজ করে, কতজন টোকাই, কতজন ক্ষুধা-অপুষ্টি আর রোগের কবলে পড়ে অকালে পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়, কে রাখে তাদের খবর?

জাতীয় শিশু দিবস কী? : জাতিসংঘ ১৯৫৪ সালে এ দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। প্রতিবছর অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার ‘জাতীয় শিশু দিবস’ পালন করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশে ১৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম দিনটিকেই ‘শিশু দিবস’ হিসেবে পালিত হয়। এ দিবস পালনের উদ্দেশ্য হল – শিশু-কিশোরদের সঠিকভাবে গড়ে তুলতে হবে ও তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের পথনির্দেশ দিতে হবে।

শিশু দিবসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি : দ্বিতীয় জাতীয়যুদ্ধের বিভীষিকাময় ও বেদনাদায়ক স্মৃতি এ দিবসটির জন্ম দেয়। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপে শত শত ফুলের মত নিষ্পাপ শিশু মারা যায়। অনেক বড় শহর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। হাজার হাজার শিশু অসহায় ও পিতৃমাতৃহীন হয়ে পড়ে। পঙ্গু ও বিকলঙ্গ হয় অনেকে। জাতিসংঘ কল্যাণ তহবিল (UNICEF) এই অসহায় শিশুদের কল্যাণ ও নিরাপত্তা বিধানে এগিয়ে আসে এবং জাতীয়বাসীর মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে একটি দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এ দিন সমগ্রিক আলোচনার মাধ্যমে জাতীয়ের বিভিন্ন দেশের শিশুদের সমস্যাবলি জাতীয় ফোরাম তুলে ধরে এবং সমাধানের পথ খুঁজে বের করে। তাই জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ১৯৫৪ সালে জাতীয়ব্যাপী দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

শিশু দিবসের তাৎপর্য : জাতীয় শিশু দিবসের তাৎপর্য গভীর ও ব্যাপক। তাই জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যেই সারা জাতীয়ে অক্টোবর মাসে প্রথম সোমবার পালিত হয় ‘জাতীয় শিশু দিবস’। এই দিবসটি পালনের উদ্দেশ্য হচ্ছে শিশুদের কল্যাণ-সাধন এবং তাদের নানাবিধ সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান করে তাদের মৌলিক অধিকার আদায় করা। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, জাতীয়ের অধিকাংশ মানুষ এখনও ‘জাতীয় শিশু দিবস’ সম্পর্কে সচেতন নয়। এর জন্যে এ দিবসটির কর্মসূচি এমনভাবে করতে হবে যেন জনগণ এর তাৎপর্য গভীরভাবে অনুধাবন করতে পারে। কেবলমাত্র কাগজে-কলমে শিশুদের অধিকারের কথা লিখে সুফল পাওয়া সম্ভব নয়। তাই বাস্তবে এর রূপ দিতে হবে। এর জন্যে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসতে হবে, এগিয়ে আসতে হবে আমাদের সবার। তৃতীয় জাতীয়ের সন্তানদের দিকে তাকালে একটা বিষয়ই ধরা পড়ে – জাতীয় শিশু দিবস, শিশু সনদ ইত্যাদি যেন আমাদের সন্তানদের জন্যই করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এর প্রয়োগ কতটুকু তা ভাববার বিষয়।

শিশু সনদ : প্রতিবছর জাতীয় শিশু দিবস প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই মহা ধুমধামে পালিত হয়ে আসছে। সম্মিলিত জাতিসংঘে ১৯৫৯ সালে ’শিশু অধিকার সনদ’ ঘোষণা করা হয়। এ সনদ ‘শিশু অধিকার সনদ-৯০’ নামে পরিচিত। সনদের বিষয়বস্তুগুলো হল : (১) শিশুর সংজ্ঞা, (২) বৈষম্যহীনতা, (৩) শিশু স্বাস্থের প্রাধান্য, (৪) শিশু অধিকার বাস্তবায়ন, (৫) মাতা-পিতার অধিকার ও দায়িত্ব, (৬) জীবনধারণ ও রক্ষা, (৭) নাম ও জাতীয়তা, (৮) পরিচয় সংরক্ষণ, (৯) মাতা-পিতার সঙ্গে অবস্থানের অধিকার, (১০) পারিবারিক পুনর্মিলন, (১১) অবৈধ স্থানান্তর, (১২) মত প্রকাশের স্বাধীনতা, (১৩) তথ্য আদান-প্রদানের স্বাধীনতা, (১৪) ধর্ম পালনের অধিকার, (১৫) মেলামেশায় স্বাধীনতা, (১৬) ব্যক্তিগত জীবন, (১৭) তথ্য ও গণমাধ্যম খ্যাতি, (১৮) অনাচার ও অবহেলা রোধ, (১৯) মাতা-পিতার অবর্তমানে বিকল্প যত্ন, (২০) উদ্যোগ গ্রহণ, (২১) উদ্বাস্তু শিশু, (২২) অক্ষম শিশু, (২৩) স্বাস্থ্য পরিচর্যা, (২৪) সামাজিক পর্যালোচনা, (২৫) সামাজিক নিরাপত্তা, (২৬) জীবন-যাপনের মান, (২৭) শিক্ষা।

শিশুরা জাতির ভবিষ্যৎ : আজকের শিশু আগামীদিনে দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ কর্ণধার। একটি নবজাত শিশুর মধ্যে আজ যে প্রাণের সঞ্চার হল তা একদিন ফুলে ফলে প্রস্ফুটিত হবে। বড় হয়ে একদিন সে জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষা ও ভবিষ্যৎ স্বপ্ন সফল করবে। Wordsworth-এর ভাষায়- ‘Child is the father of a nation’. বস্তুত শিশুর মধ্যে নিহিত রয়েছে বিপুল সম্ভাবনা। কারণ, শিশুই একদিন বড় হয়ে দেশ ও সমাজের দায়িত্ব গ্রহণ করবে। তারা হবে দেশের আদর্শ নাগরিক। এ জন্য চাই শিশুর সযত্ন প্রতিপালন; বিকাশ সাধনের সুষ্ঠু পরিবেশ। শিশুদেরকে আদর, সোহাগ, যত্ন ও সুশিক্ষা দিয়ে বড় করে তোলার জন্য চাই অনুকূল পরিবেশ, উপযুক্ত শিক্ষা। উপযুক্ত অভিভাবক পেলে একটি শিশু আদর্শ মানুষরূপে বড় হয়ে উঠতে পারে। শিশু মন ফুলের মতো পবিত্র, সরল। সে যে পরিবেশে থাকে সে তার পারিপার্শ্বিক আচার-আচরণ অনুকরণ করে এবং তাতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। একটি নির্মল ফুলের মতো পবিত্র শিশু খারাপ পরিবেশ ও উপযুক্ত শিক্ষার অভাবে, কুরুচিপূর্ণ পরিবেশ, অসৎসঙ্গ ও বিবেচনাহীন অভিভাবকের অধীনে বড় হয়ে অমানুষ, বিবেকহীন ও লম্পট চরিত্রের হতে পারে। সম্ভাবনাময় আগামী দিনের এক সুনাগরিক এভাবেই অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে যেতে পারে। পক্ষান্তরে সুশিক্ষা, সুরুচি, শিক্ষিত বিবেকবান অভিভাবক একটি শিশুর অন্তর সুপ্ত ভবিষ্যতের পিতাকে জাগিয়ে তুলতে পারে। এর ফলে জাতি পেতে পারে একজন আদর্শ চরিত্রবান নাগরিক, যার দ্বারা দেশ ও সমাজ সঠিক পথে চালিত হতে পারে। আর উন্নত চরিত্র, মহান মানুষের সমবায়েই একটি মহৎ জাতি গড়ে ওঠে। যেহেতু শিশুর মধ্যে জাতির উন্নতি ও সমৃদ্ধির বীজ লুক্কায়িত থাকে, তাই শিশুর সযত্ন প্রতিপালন, সুশিক্ষা ও চরিত্র গঠনে প্রত্যেক অভিভাবককে দায়িত্ব নিতে হবে এবং এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় পর্যায়েও উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।

শিশুদের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য : জাতীয়ের মোট জনসংখ্যার শতকরা ২৫ ভাগই শিশু। এটা পরম সত্য যে, শিশুরাই জাতির ভবিষ্যৎ এবং আগামী দিনের রাষ্ট্রনায়ক। তারাই একদিন সুনাগরিক হয়ে দেশের নেতৃত্ব দেবে। তাই তারা অবহেলিত থাকলে ভবিষ্যাৎ প্রজন্ম মুখ থুবড়ে পড়বে। এহেন ভয়াবহ অবস্থার কবল থেকে মুক্তি লাভের জন্য জাতীয়ের প্রতিটি দেশই শিশু সমাজকে নিয়ে চিন্তা-ভাবনা শুরু করেছে- কী করে এদেরকে সুন্দর করে গড়ে তোলা যায়, কীভাবে এদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত করা যায়। সুন্দর মানব-সমাজ গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে শিশুকে গড়তে হবে। কারণ, শিশুর প্রতি অযত্ন অবহেলা কোনো বিবেকবান মানুষেরই কাম্য নয়।

জাতীয়ে শিশুদের অবস্থান : জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত শিশু অধিকারগুলো সবদেশেই স্বীকৃতি পেয়েছে। কিন্তু স্বীকৃতি-দানকারী বহু দেশে এ অীধকারগুলো নানা কারণে বাস্তবায়িত হয়নি। জাতীয়ের একটি অংশের শিশুরা যেসব অধিকার ভোগ করছে অপ অংশের শিশুরা তা থেকে বঞ্চিত থাকছে। সেসব অধিকার ভোগের কোনো সুযোগই তাদের নেই। তারা পাচ্ছে না ক্ষুধায় অন্ন, পরনের কাপড়, স্বাস্থ্য আ শিক্ষার সুবিধা। সমগ্র জাতীয়ে অধিকারবঞ্চিত শিশুর সংখ্যা বর্তমানে একশত কোটিরও বেশি। এমনকি অনেক মানবসন্তান আছে যারা বেঁচে থাকার ন্যূনতম অধিকারটুকু পাচ্ছে না। বিশেষ করে আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলোতে এমনি অবহেলিত ও অধিকারবঞ্চিত শিশুর সংখ্যাই সর্বাধিক। আর সারা জাতীয়ে অপুষ্টিতে ভুগে প্রতিবছর প্রায় তিন লাখ শিশু অকালে পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়।

বাংলাদেশে শিশুদের বর্তমান অবস্থা : জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদের ধারাগুলো সবদেশ মেনে নিলেও জাতীয়ের উন্নয়নশীল গরিব দেশগুলো অর্থনৈতিক কারণে ধারাগুলো পুরোপুরি কার্যকর করতে পারছে না। বাংলাদেশে বর্তমান প্রায় পাঁচ কোটি শিশু-কিশোর রয়েছে। এদের জন্য খাদ্য, বস্ত্র, স্বাস্থ্য, বাসস্থান ও শিক্ষার মতো মৌলিক অধিকারগুলো দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। শুধু বাংলাদেশেই নয়, ভারত, নেপাল, বার্মা, মালয়েশিয়া, শ্রীলংকা ইত্যাদি কোনো দেশেই শিশু অধিকার সনদ পুরোপুরি কার্যকর করা সম্ভব হয় নি। এর মূল কারণ হচ্ছে দারিদ্র্য, অর্থনৈতিক সংকট ও জনসংখ্যা বৃদ্ধি। তবে চরম হতাশার মধ্যেও আশার কথা এই যে, ইতোমধ্যেই বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দ্বারা কলে-কারখানায় ও রাস্তাঘাটে কর্মরত শিশু শ্রমিকের শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাছাড়া শিশু একাডেমী গড়ে তোলা হয়েছে। কচিকাঁচার আসর, ফুলকুঁড়ি, শাপলা-শালুক, খেলাঘর, কাঁচি-কণ্ঠ ইত্যাদি অনেক শিশু সংগঠন তৈরি করা হয়েছে। শিশু, নবারুণ, সবুজ পাতা- এসব শিশুপত্রিকা নিয়মিত বের হচ্ছে। তাছাড়া জাতীয় প্রচারমাধ্যমেও বিভিন্ন আঙ্গিকের অনুষ্ঠানমালা প্রচার করা হয়। যেমন – অঙ্কুর, নতুন কুঁড়ি ইত্যাদি।

উপসংহার : মহাসমারোহে প্রতিবছর ‘জাতীয় শিশু দিবস’ পালিত হয়। কিন্তু বাস্তবে এর প্রয়োগ কতটুকু? এর জন্য সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। আর একটি সুষমামণ্ডিত নির্মল পৃথিবী গড়ে তুলতে হবে। আমাদের ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য। জাতীয় শিশু দিবসে আমরা যেন সবাই বলতে পারি-

 ‘প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল
এ জাতীয়কে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।’

১৭ মার্চ জাতীয় শিশু দিবস রচনা শেষ। 

জাতীয় শিশু দিবস রচনা pdf

যারা জাতীয় শিশু দিবস রচনা pdf পেতে চান। তাদের জন্য এখানে pdf তুলে ধরা হয়েছে। নিচের লিঙ্ক থেকে pdf ডাউনলোড করুন। 

PDF Download 

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন রচনা

১৭ মার্চ কেন পালন করা হয়

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন নিয়ে রচনা

১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন রচনা শুরুঃ 

ভূমিকাঃ শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও সচেতনতা সৃষ্টির জন্য আন্তর্জাতিকপর্যায়ে বছরে একাধিকবার বিভিন্ন নামে শিশু দিবস পালন করা হয়। এর পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নিজেদের মতো করে পালন করে জাতীয় শিশু দিবস। আন্তর্জাতিকভাবে অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ পালন করা হয়।

জাতিসঙ্ঘের ঘোষণা অনুযায়ী ২০ নভেম্বর বিশ্ব শিশু দিবস হিসেবে পালন হয়। এছাড়া আন্তর্জাতিক শিশু দিবস পালিত হয় ১ জুন। এছাড়া ১১ অক্টোবর সারা বিশ্বে আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস পালিত হয়। শিশুদের জন্য এ রকম আরো কয়েকটি দিবস রয়েছে। এর বাইরে বিশ্বের দেশগুলো তাদের গুরুত্বপূর্ণ কোন দিনকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালন করে থাকে। যেমন যুক্তরাষ্ট্রের জুনের দ্বিতীয় রোববার পালন করা হয় শিশু দিবস। আবার পাকিস্তানে শিশু দিবস হলো ১ জুলাই, ৪ এপ্রিল শিশু দিবস উদযাপিত হয় চীনে।

শিশু দিবসে বঙ্গবন্ধুর অবদানঃ 

অন্যদিকে ব্রিটেনে শিশু দিবস পালন করা হয় ৩০ আগস্ট, জাপানে ৫ মে, পশ্চিম জার্মানিতে ২০ সেপ্টেম্বর। তবে সব দেশেই শিশু দিবস পালনের উদ্দেশ্য একটাই, দেশের শিশুদের অধিকার ও তাদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ফের একবার সচেতনতার বার্তা দেয়া।

ভারতে জাতীয় শিশু দিবস পালন করা হয় ১৪ নভেম্বর। দেশটির প্রথম প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জওয়াহের লাল ও শিশুদের প্রিয় চাচা নেহরুর জন্মদিন ১৪ নভেম্বরকে জাতীয় শিশু দিবস ঘোষণা করে ১৯৬৭ সাল থেকে পালন করে আসছে।

বাংলাদেশে ১৯৯৭ সাল থেকেই দিবসটি পালন শুরু হয়। এ দিনটিকে সাধারণ ছুটিও ঘোষণা করা হয়। এই মুজিববর্ষে আনন্দের দিন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন।

শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর ভালবাসাঃ 

১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালন করা হয়। বঙ্গবন্ধু শিশুদের অত্যন্ত আদর করতেন, ভালোবাসতেন। শিশুদের সাথে গল্প করতেন, খেলা করতেন। তিনি বিশ্বাস করতেন আজকের শিশুরাই আগামী দিনের দেশ গড়ার কারিগর। আজকের তরুণ প্রজন্ম এই মহান নেতার আদর্শ থেকেই দেশ গড়ার অনুপ্রেরণা লাভ করবে। যারা বাংলাদেশকে বিশ্বাস করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে তাদের মাঝেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বেঁচে থাকবেন।

সৈয়দ শামসুল হকের ভাষায়- যেখানে ঘুমিয়ে আছো, শুয়ে থাকো বাঙালির মহান জনক তোমার সৌরভ দাও, দাও শুধু প্রিয়কণ্ঠ শৌর্য আর অমিত সাহস টুঙ্গিপাড়া গ্রাম থেকে আমাদের গ্রামগুলো তোমার সাহস নেবে নেবে ফের বিপ্লবের দুরন্ত প্রেরণা।

জাতীয় শিশু দিবস প্রতি বছর পালিত হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনে।

আজকের শিশুরাই আমাদের আগামীর ভবিষ্যৎ। এজন্য শিশুদের যথাযথ শিক্ষা ও মানসিক বিকাশ ঘটাতে হলে তাদেরকে সেভাবে বেড়ে উঠতে দিতে হবে। অনেক শিশু দরিদ্রতার কারণে তাদের সেই মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হতে হয়। বাধ্য হয়ে লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে নিষিদ্ধ শিশু শ্রমে জড়িয়ে পড়ে। যে বয়সে ওদের লেখাপড়া করার কথা সে বয়সে দরিদ্রতার কারণে বিভিন্ন কলকারখানা, হোটেল, ওয়ার্কশপ, দোকানপাট ইত্যাদিতে অমানুষিক পরিশ্রমে লিপ্ত থাকে।

উপসংহার :

বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি উন্নয়নশীল দেশ। এখানে বাস ১৬ কোটি মানুষের। এ বিশাল জনগোষ্ঠীর ৪০ শতাংশ অর্থাৎ ৬ কোটিরও বেশি শিশু। তাই শিশুদের মৌলিক অধিকারগুলো ফিরিয়ে দিয়ে তাদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে হবে।

কাব্যিক ভাষায়:

শিশুদের মুখে নয় হৃদয়ে রাখো যদি
এই ভালোবাসা হবে সার্থক,
শিশুরা ভালো হলে দেশ হবে উন্নত
উজ্জ্বল হয়ে রবে মারাত্মক।

শিশুদের সাদামনে কালো দাগ লাগলে
আমরাই হবো তাতে দোষী যে
নৈতিক শিক্ষায় থাকলে দীক্ষায়
জ্ঞানে ও গুণে হবে খুশি সে।

শেখ মুজিবুর রহমানের কর্ম ও রাজনৈতিক জীবন অসামান্য গৌরবের। তার এ গৌরবের ইতিহাস থেকে প্রতিটি শিশুর মাঝে চারিত্রিক দৃঢ়তার ভিত্তি গড়ে উঠুক এটাই জাতীয় শিশু দিবসের মূল প্রতিপাদ্য। সর্বোপরি আজকের শিশুরাই আগামীর সক্ষম নাগরিক। তাই শিশু-কিশোরদের চারিত্রিক দৃঢ়তার পাশাপাশি স্বাস্থ্য-পুষ্টির দিকে নজর দিয়ে তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ নিশ্চিত হোক আমাদের এ বছরের শিশু দিবসের ভাবনা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top