আজ লাইলাতুল কদরের রাত্রি, সকল মুসলিমের কাছে এক মর্যাদাপূর্ণ রাত শবে কদর। এড়াতে পৃথিবীর সকল মুসলমান বিভিন্ন এবাদত এর মাধ্যমে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে। অনেকেই হয়তো শবে কদর অর্থ জেনে থাকবেন। শবে কদর রাত্রের অর্থ হচ্ছে মহামান্বিত রাত বা পবিত্র রজনী। রমজান মাসের এই পবিত্র রজনীতে সবাই দোয়া জিকির ও নফল নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে নিজের মনের চাওয়া-পাওয়া ও নিজের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে।
এ রাতের নামাজের রয়েছে অসংখ্য ফজিলত ও শবে কদরের রাত্রি তে দান সদকার জন্য রয়েছে হাজার বছরের দান সদকা করার সমান সওয়াব। তাই আপনাদের জন্য আজকের এই পোস্টের তুলে ধরব শবে কদরের নামাজের নিয়ম ও শবে কদরের নামাজ কয় রাকাত। অন্যদিকে আপনাদের কথা চিন্তা করে আরও উল্লেখ করব শবে কদর নামাজের নিয়ত।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নানান ভাষাভাষীর মুসলিম অবস্থিত। শবে কদরের রাত্রি চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল হয়। যার জন্য বিভিন্ন দেশে তারিখ বিভিন্ন হয়ে থাকে। যেমন সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, দুবাই, ওমান, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ইতালি, ফ্রান্স সহ আশেপাশের দেশে শবে কদর পালন করা হবে ২৮ এপ্রিল।
অন্যদিকে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে শবে কদর পালন করা হবে ০৬ এপ্রিল। তবে অনেকেই আছেন যারা ২৭ রমজানের রাত্রিকে শুধু শবে কদরের রাত্রি মনে করে। কিন্তু ইসলামিক বড় বড় স্কলারগণ বিভিন্ন ইসলামিক হাদিসের মাধ্যমে উল্লেখ করেছে। শবে কদর রমজানের শেষ ১০ দিনের বেজোড় রাত্রিগুলো তে হতে পারে। তাই সবার উচিত ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯ রমজানে রাত্রি জাগরন করে শবে কদরের ইবাদত করা।
শবে কদর কি
অনেকেই আছেন যারা শবে কদর অর্থ কি শবে কদর কি জানতে চান। তাদের জন্য লাইলাতুল কদর অর্থ কি দেওয়া হয়েছে এখানে। শবে কদর অর্থ মহামান্বিত রজনী, মর্যাদার রজনী, সৌভাগ্যের রজনী ও মূল্যবান রজনী। ফারসি ভাষায় সবে ও আরবি ভাষা লাইলাতুল। লাইলাতুল শব্দের অর্থ রাত্রি বা রজনী। অন্যদিকে কদর শব্দের অর্থ সম্মান মর্যাদা বা মহাসম্মান। তবে এসবের পাশাপাশি আরো অর্থ হল ভাগ্য, পরিমাণ ও তাকদীর।
শবে কদর এর নামাজ
সকল মুসলমান শবে কদরের রাত্রি তে দোয়া, জিকির ও বিভিন্ন দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে নিজের জীবনের গুনাহ এর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। অন্যদিকে এই রাত্রি যদি কেউ পেয়ে যায়। তাহলে তার এক রাতের যে নামাজ হবে তার সওয়াব হাজার বছর নফল নামাজ পড়ার সওয়াব হিসেবে নিজের আমল নামায় লেখা হবে।
তাই বিভিন্ন দেশের প্রবাসীসহ সবাই শবে কদরের নামাজ সঠিকভাবে পড়ার জন্য নিজের নিকটস্থ মসজিদে যায়। ২৭ রমজানে রাত্রিতে অনেক মুসলমান রাত্রি জাগরণ করে নফল ইবাদত করে। তাদেরকে বলব শুধু মাত্র ২৭ রমজানে রাত্রি জাগরন না করে। শেষ ১০ রমজানের বিজোড় রাত্রিগুলোতে প্রতিনিয়ত নামাজ, দোয়া ও জিকির দিয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন।
শবে কদর নামাজ কত রাকাত
অসংখ্য মুসলিম রয়েছেন যারা শবে কদর নামাজ কত রাকাত জানেন না। যার জন্য অনেকেই গুগলে অনুসন্ধান করেন শবে কদর নামাজ কয় রাকাত। শবে কদরের নামাজ একটি নফল ইবাদত হিসেবে আমাদের মাঝে পরিচিত। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সকল মুসলমান শবে কদরের ইবাদত করার জন্য মসজিদে জমায়েত হয়।
শবে কদর নামাজের নির্দিষ্ট কোন রাকাত-সংখ্যা নেই। আপনি নফল নামাজ হিসেবে ২ রাকাত করে যত খুশি তত নফল ইবাদত করতে পারেন। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন আপনার যেন পরের দিনের ফজরের ফরজ নামাজ ছুটে না যায়।
আরও দেখুনঃ
শবে কদরের নামাজের নিয়ত
শবে কদর নামাজ পড়ার জন্য অনেকেই বাংলা ও আরবি নিয়ত জানার জন্য গুগলে অনুসন্ধান করেন। তাদের জন্য আজকের এই পোস্ট এ শবে কদর নিয়ত তুলে ধরা হয়েছে। লাইলাতুল কদর নামাজ পড়ার আগে অবশ্যই আপনাকে নিয়ত করতে হবে। সেই নিয়ত কিভাবে করবেন তা নিচে উল্লেখ করা হয়েছে। যারা আরবি পড়তে পারেন না তাদের জন্য বাংলা শবে কদর নিয়ত দেওয়া হয়েছে। তবে অবশ্যই চেষ্টা করবেন আরবী পড়া যত দ্রুত শেখা যায়।
শবে কদরের নামাজের নিয়ত আরবি
শবে কদর নামাজের আরবি নিয়ত: ‘নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তায়া’লা রাকআ’তাই ছালাতি লাইলাতিল কদর-নাফলি, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা-জিহাতিল্ কা’বাতিশ্ শারীফাতি আল্লাহু আকবার’।
শবে কদর নামাজের বাংলা নিয়ত: আমি কাবামুখী হয়ে আল্লাহর (সন্তুষ্টির) জন্য শবে কদরের দুই রাকআত নফল নামাজ পড়ার নিয়ত করতেছি – আল্লাহু আকবর।
শবে কদর নামাজ
সৌভাগ্যের রজনী তে সকল দেশের মুসলমান শবে কদর নামাজ পড়ে থাকে। শবে কদর নামাজ পড়ার জন্য নিয়ত জানতে চায় অনেকে। এই রাত্রির রয়েছে অসংখ্য ফজিলত। যার জন্য পৃথিবীর সকল মুসলমান এই রাত্রি জাগরন করে থাকে। নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে বারবার ক্ষমা প্রার্থনা করে থাকে পৃথিবীর সকল মুসলমান। তাই আজকের এই পোস্টে শবে কদর নামাজের বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
জেনে নিনঃ
- শবে কদর রাতের বৈশিষ্ট্য | লাইলাতুল কদর রাত্রি চেনার উপায়
- লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস, আমল, ফজিলত ও দোয়া ২০২৪
শবে কদরের নামাজের নিয়ম
শবে কদর নামাজ পড়ার জন্য আপনার জানার প্রয়োজন হবে শবে কদর নামাজ কত রাকাত, কদর নামাজের নিয়ত ও শবে কদর নামাজ পড়ার নিয়ম। নফল ইবাদত হিসেবে সূরা ফাতিহার সাথে যে কোন সূরা মিলিয়ে আপনি শবে কদরের নামাজ পড়তে পারে।
- সর্বপ্রথম মনে মনে শবে কদর নামাজ পড়ার নিয়ত করবেন।
- আল্লাহু আকবার বলে হাত বাঁধার পর সানা পড়বেন।
- এখন সুরা ফাতিহা পড়ুন।
- কোরআন শরীফের যে কোন সূরা বা সর্বনিম্ন ৩ আয়াত সম্পূর্ণভাবে পড়ে ফেলুন।
- তারপর আল্লাহু আকবার বলে রুকুতে জান।
- এভাবে ১ম রাকাত শেষ করে ২য় রাকাত শুরু করুন।
- ২য় রাকাতে আবারো সূরা ফাতিহা ও সাথে কোরআন শরীফের যে কোন সূরা মিলিয়ে পড়ুন।
- এখন আগের মত করে দ্বিতীয় রাকাত শেষ করে বসে পড়ুন। আরো পড়ুন আত্তাহিয়াতু, দরুদ শরীফ ও দোয়া মাসূরা।
- এখন ডানে ও বামে সালাম ফিরিয়ে ২ রাকাত নামাজ শেষ করুন।
এভাবে যতো খুশি ততো শবে কদরের নফল নামাজ পড়ুন। সাথে মাঝে মাঝে বিশ্রাম নিয়ে দোয়া ও জিকির করুন। শবে কদরের রাত্রিগুলোতে অবশ্যই দান-সদকা করবেন।
লাইলাতুল কদরের রাতের বিশেষ আমল
আমরা চেষ্টা করেছি এই পোষ্টের মাধ্যমে বিশ্বের সকল মুসলিমকে শবে কদরের নামাজ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানিয়ে দেওয়ার। আপনাদের যদি আজকের এই পোষ্ট শবে কদরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয়। তাহলে অবশ্যই আপনার কাছের মানুষদের সাথে শেয়ার করুন। যাতে তারা খুব সহজেই শবে কদরের নামাজ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারে।
আরও দেখুনঃ
thanks for sharing
You’re welcome.